বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা। কিন্তু তাদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টি, যত্ন ও সহানুভূতির ঘাটতি আজও চোখে পড়ে। এই সংকট নিরসনে এগিয়ে এসেছে Elderly Welfare Foundation, যারা ২০২১ সাল থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে।
২০২১ সাল: একটি আশার সূচনা
২০২১ সালে যাত্রা শুরু করে Elderly Welfare Foundation। মহামারির সময় যখন অনেক প্রবীণ নাগরিক একাকীত্ব, অসুস্থতা এবং অবহেলার শিকার হচ্ছিলেন, তখন এই সংগঠনটি সামনে আসে এক আলোর দিশার মতো। তাদের লক্ষ্য ছিল— "সম্মান, সেবা ও সহানুভূতির মাধ্যমে প্রবীণদের পাশে দাঁড়ানো।"
কীভাবে সাহায্য করছে Elderly Welfare Foundation
১. স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা:
প্রবীণদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির, ওষুধ বিতরণ এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংগঠনটি। গ্রামীণ এলাকাগুলোর অবহেলিত বয়স্ক মানুষদের কাছে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে তারা বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
২. মানসিক সহায়তা ও বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক গঠন:
বয়স্কদের মানসিক স্বাস্থ্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। Elderly Welfare Foundation "বন্ধুর সাথে কথা বলি" নামক একটি হেল্পলাইন চালু করেছে, যেখানে প্রবীণরা ফোনে কাউন্সেলিং ও সাপোর্ট পান।
৩. খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ:
অভাবগ্রস্ত প্রবীণদের জন্য নিয়মিতভাবে খাদ্যসামগ্রী, পোশাক ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। বিশেষ উৎসব বা দুর্যোগের সময় এই সহায়তা আরও বিস্তৃত হয়।
৪. সচেতনতা কার্যক্রম ও জনসম্পৃক্ততা:
তরুণ প্রজন্মকে বয়স্কদের প্রতি সহানুভূতিশীল করে তুলতে বিভিন্ন কর্মশালা ও ক্যাম্পেইন আয়োজন করে Elderly Welfare Foundation। তারা চায়, সমাজে বয়স্কদের প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়িত্ববোধ যেন জাগ্রত হয়।
তাদের প্রচেষ্টার প্রভাব
তিন বছরেরও কম সময়ে Elderly Welfare Foundation হাজার হাজার প্রবীণের মুখে হাসি ফোটাতে সক্ষম হয়েছে। অনেকেই এই সহায়তার মাধ্যমে আবার নতুনভাবে জীবনকে গ্রহণ করেছেন। পরিবার থেকে দূরে থাকা, নিঃসঙ্গতা কিংবা অসুস্থতার কারণে যারা জীবন নিয়ে হতাশ ছিলেন, তারা এই সংগঠনের সহযোগিতায় ফিরে পেয়েছেন সাহস ও আশার আলো।
শেষ কথা
সমাজের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও শ্রদ্ধার যোগ্য সদস্যরা হচ্ছেন প্রবীণরা। তাদের জন্য একটি নিরাপদ, সম্মানজনক ও স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। Elderly Welfare Foundation সেই দায়িত্ববোধ থেকেই কাজ করছে — ২০২১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত।
এই যাত্রায় তাদের পাশে দাঁড়ানো মানে, নিজের ভবিষ্যতের জন্যও একটি মানবিক সমাজ গড়ে তোলা। আসুন, আমরা সবাই মিলে প্রবীণদের জন্য একটি ভালো আগামী নির্মাণে সহযাত্রী হই।