আমার ছোটবেলা থেকেই এক স্বপ্ন ছিল। ওই স্বপ্নে আমি দেখতাম, এক বিশাল সমাজ যেখানে আমাদের বৃদ্ধ-প্রবীণরা পরিপূর্ণ সম্মান, ভালোবাসা এবং সেবা পেয়ে সুখে শান্তিতে জীবন কাটাতে পারে। আমি মনে করতাম, যাদের জীবনের সময় অনেকটাই পেরিয়ে গেছে, তাদের প্রতি সমাজের দায়িত্ব যেন নিঃশেষ না হয়ে যায়। আমি কখনো ভাবতাম না, এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারবে কি না, তবে একদিন অনুভব করলাম, এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার সময় এসেছে।
একদিন আমি বাড়ির বাগানে বসে ছিলাম। বাগানের ফুলগুলো মেলে ধরে এক অদ্ভুত শান্তি পাচ্ছিলাম, তখন আমার মনে হল প্রবীণদের জন্য কিছু করা উচিত। আমি ভাবলাম, যদি আমি প্রবীণদের জন্য এমন কিছু করতে পারি, যাতে তাদের প্রতি সমাজের দৃষ্টি পরিবর্তিত হয়, তাহলে হয়তো আমি আমার জীবনের একটি বড় লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।
এতদিন পর্যন্ত প্রবীণদের নিয়ে সমাজে যে অবহেলা ছিল, সেটি একদিন পরিবর্তিত হবে বলে আমি নিশ্চিত ছিলাম। আমি বিশ্বাস করতাম যে, আমরা যদি তাদের সেবা করি, তাদের অবদানকে সম্মান জানাই, তাহলে সমাজে বৃদ্ধদের জন্য একটি আলাদা জায়গা তৈরি হবে। এই ভাবনা থেকেই প্রবীণ কল্যাণ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা শুরু করি।
ফাউন্ডেশনটি প্রতিষ্ঠা করার পর, আমার প্রধান লক্ষ্য ছিল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সেবা বিষয়ে কাজ করা। তাদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা, অবসরকালীন প্রশিক্ষণ, এবং সবার সাথে সংযুক্ত করার ব্যবস্থা ছিল। একদিন, আমি যখন ফাউন্ডেশনটির প্রথম উদ্যোগে প্রবীণদের জন্য একটি সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করলাম, সেই দৃশ্যটি আমার মনে আজও জীবন্ত। বৃদ্ধরা তাদের হাতের মাঝে এক নতুন আশা অনুভব করছিলেন, যেন তারা আর সমাজ থেকে অবহেলিত নন।
আমার স্বপ্ন ছিল এবং আজও রয়েছে, একটি সমাজ যেখানে প্রবীণরা পরিপূর্ণ মানবাধিকার নিয়ে বাঁচতে পারবেন। সমাজের তরুণেরা যাতে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিখে, তাদের সম্মান করে, এবং তাদের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করে, সেই লক্ষ্য নিয়ে আমি প্রতিদিন কাজ করে যাচ্ছি। আগামী দিনে, আমার আশা, প্রবীণদের জন্য একটি সুন্দর, সুখী এবং সম্মানজনক জীবন তৈরি হবে।
এটাই আমার স্বপ্ন, এবং আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একদিন এটি সত্যি হয়ে উঠবে।