একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের জীবনের গল্প এবং এক যুবকের সহানুভূতি কিভাবে একটি সমাজকে আলোকিত করতে পারে, তা নিয়েই এই অনুপ্রেরণাদায়ক লেখা।
আজকের বাংলাদেশে প্রবীণদের অবস্থা কেমন? সমাজে তাঁদের কী গুরুত্ব, এবং আমরা কীভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারি?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর লুকিয়ে আছে একটি ছোট কিন্তু হৃদয়ছোঁয়া গল্পে—একজন শিক্ষক এবং এক যুবকের মধ্যে গড়ে ওঠা আন্তরিকতায়।
সামাজিক উন্নয়নে প্রবীণদের পাশে থাকি
লেখক: আব্দুল হালিম
প্রতিষ্ঠাতা, প্রবীণ কল্যাণ ফাউন্ডেশন
ভূমিকা
বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে আছেন অভিজ্ঞ প্রবীণ নাগরিকরা। তারা একসময় সমাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন, পথ দেখিয়েছেন। আজ তারা অবহেলিত। অথচ তাঁদের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও ভালোবাসা দিয়ে সমাজকে আরও মানবিক করে তোলা যায়। এই লেখায় তুলে ধরা হলো এমনই একটি গল্প—যা আমাদের ভাবতে শেখাবে, বদলাতে উৎসাহ দেবে।
গল্প: এক নিরব শিক্ষক ও এক যুবক
বয়স ৭২, নাম আব্দুল কাদের। একসময় তিনি ছিলেন একজন সম্মানিত স্কুল শিক্ষক। তাঁর হাতে গড়া অনেক ছাত্র এখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত। স্ত্রী মারা গেছেন বহু আগেই, সন্তানরা প্রবাসে। আজ তিনি নিঃসঙ্গ, একাকী।
একদিন রাসেল নামের এক যুবক তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।
"চাচা, আপনার জীবনের গল্প শুনতে চাই,"—এই ছোট্ট কথাতেই আব্দুল কাদেরের চোখে জল এসে যায়।
রাসেল প্রতিদিন কিছু সময় কাটাতে থাকে তাঁর সঙ্গে। গল্প শোনে, অভিজ্ঞতা নেয়। একদিন সে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়: “একজন প্রবীণের না বলা গল্প।”
পোস্টটি ভাইরাল হয়। মানুষ জানতে পারে—এই নিরব মানুষটি ছিলেন গ্রামের শিক্ষার বাতিঘর। তাঁর জীবনের গল্পে সবাই অনুপ্রাণিত হয়। এরপর থেকে কেউ তাঁকে একা থাকতে দেয় না।
আমাদের করণীয়
প্রবীণদের কথা শোনা
তাঁদের গল্পগুলো ডকুমেন্ট করা
তরুণদের উৎসাহিত করা প্রবীণদের পাশে দাঁড়াতে
সামাজিকভাবে তাঁদের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া
উপসংহার
প্রবীণরা সমাজের বোঝা নয়—তাঁরা এক একটি জীবন্ত ইতিহাস।
তাঁদের পাশে থাকলে সমাজ উপকৃত হয়, মূল্যবোধ বেঁচে থাকে।
তারুণ্যের শক্তি আর প্রবীণের অভিজ্ঞতা—এই যুগলবন্দিই গড়ে তুলতে পারে একটি মানবিক বাংলাদেশ।